আজিজুর গাজী জেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট।
বাগেরহাটে চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক এ.এস.এম. হায়াত উদ্দিন হত্যা মামলার রহস্য দ্রুতই উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন করে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ডিবির এসআই শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ টিম রাজধানীর সাভার-আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় অবস্থিত “নিউ গোল্ডেন সিটি” নামের একটি আবাসিক হোটেলের চতুর্থ তলার ১১৮ নম্বর কক্ষ থেকে গ্রেফতার করে দুই অভিযুক্তকে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো—
মোঃওমর ফারুক ওরফে ইমন হাওলাদার (২৫), পিতা: শহিদুল ইসলাম, গোপালকাটি, বাগেরহাট সদর।
মো. আশিকুল ইসলাম ওরফে আশিক (২৫), পিতা: আব্দুল হাই।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর নিহতদের মধ্যে ওই দুই পরিকল্পিতভাবে ঢাকায় পালিয়ে যায় এবং আশুলিয়ায় লুকিয়ে ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর সোমবার (০৬ অক্টোবর) তারা বাগেরহাট সদর মডেল থানায় দায়ের করা মামলা নং-০২, তারিখ ০৬/১০/২০২৫-এর প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরে আদালতে তারা ভূমি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ডিবির ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আমাদের টিম নিরলসভাবে কাজ করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে পেরেছি—এটি পুলিশের বড় সাফল্য। গ্রেফতারকৃতরা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে; এটিই আমাদের এখনও পর্যন্ত পাওয়া প্রাথমিক জবাব। তদন্ত চলমান আছে এবং মামলার অন্যান্য দিকগুলো তদন্ত করে শীঘ্রই মেনামি করা হবে।”
তবে গ্রামে গ্রামে ও শহরের বিভিন্ন মহলে বাগেরহাটবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই ডিবি পুলিশের এই সফল অভিযানের প্রশংসা করলেও অনেকে বলেছেন, “খুনিদের গ্রেফতার হওয়া স্বস্তির, কিন্তু হত্যার পেছনের আইন-শৃঙ্খলা বা অন্য কোনো তৎপরতা-পরিকল্পনার চিন্তা বা সাপোর্টিং নেটওয়ার্ক থাকলে সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।” তারা তদন্তে দ্রুত ও স্বচ্ছতার দাবিও জানান।
সাংবাদিক হায়াত উদ্দিনের অনুষঙ্গীরা ও স্থানীয় গণমাধ্যম অঙ্গন থেকে বলেছে, “হায়াত উদ্দিনের মৃত্যু শুধু তাঁর পরিবার নয়, পুরো জেলার সাংবাদিক সমাজকে আঘাত করেছে। আমরা চাই— প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক; আর যারা পেছন থেকে প্রয়োজনে ষড়যন্ত্র করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হোক।”
উল্লেখ্য, ঘটনার প্রেক্ষাপট ও অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি সাপেক্ষে তদন্ত বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে আরও তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন